কোন কল্যাণই করতে পারছে না জয়পুরহাট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র
জয়পুরহাট প্রতিনিধি
১৫-১১-২০২৫ দুপুর ১:৬
কোন কল্যাণই করতে পারছে না জয়পুরহাট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র
নানা রকমের সমস্যা নিয়ে ধুকে ধুকে চলছে জয়পুরহাটের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। দীর্ঘদিন থেকে নেই ওষুধ সরবারাহ। নেই পরীক্ষা-নিরাক্ষার বিভিন্ন যন্ত্রপাতি। সেই সাথে এনেস্থেসিয়া ডাক্তার ও প্রয়োজনীয় জনবল না থাকাতে এ প্রতিষ্ঠানটির চিকিৎসা সেবায় একেবারেই ধ্বস নেমেছে। এ ছাড়া দীর্ঘদিনের পুরোনো ভবন জরাজীর্ণ হওয়ায় ঝুঁকি নিয়েই চলছে স্বাস্থ্যসেবা। তাই দ্রুত সমস্যাগুলো সমাধান করে কাঙ্খিত সেবা নিশ্চিত করার দাবি রোগী ও স্বজনদের। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, নানা সঙ্কট থাকায় কাঙ্খিত সেবা দেওয়া যাচ্ছেনা। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ সমস্যাগুলো সমাধান করলে রোগীদের কাঙ্খিত সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
সরেজমিনে জানা গেছে, বিগত ১৯৭৯ সালে মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে জয়পুরহাট শহরের ধানমন্ডি এলাকায় প্রতিষ্ঠা করা হয় সরকারি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। এটি জয়পুরহাট মাতৃমঙ্গল হাসপাতাল নামেই বেশি পরিচিত। চিকিৎসা সেবায় হাসপাতালটি এক সময় ব্যাপক সুনাম কুড়ালেও বর্তমানে নানা সমস্যায় চিকিৎসা সেবায় একেবারেই ধ্বস নেমেছে। ফলে এখন আর সেবা নিতে আসাদের তেমন কোন কল্যাণ করতে পারছে না হাসপাতালটি। হাসপাতালটিতে গত প্রায় ৮ মাস থেকে নেই কোন ঔষধ সরবরাহ। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাাতি না থাকায় বন্ধ রয়েছে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থাও। আর প্রয়োজনীয় জনবল সঙ্কট সহ এনেস্থেসিয়া ডাক্তার না থাকায় গত প্রায় দুই বছর থেকে সব ধরনের অপারেশনও বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র নরমাল ডেলিভারী করানো হচ্ছে এখানে। এছাড়া পুরাতন ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় তৈরী হয়েছে ঝুঁকি। ভবনের অনেক জায়গায় ফাটল ধরেছে। কিছু জায়গায় খুলে পড়েছে পলেস্তোরা। এতে রোগীদের পাশাপাশি চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাসপাতালের স্টাফদের। দ্রুত সমস্যাগুলো সমাধান করার দাবি রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের।
জয়পুরহাট শহরের সাহেব পাড়ার আব্দুল মোমিন বলেন, আমার স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসেছিলাম। ৩ বার চেকআপ করালাম, কিন্তু একবারও ওষুধ পাইনি। মেশিন না থাকায় আলট্রাসনোগ্রাম করাতে পারিনি। রক্ত পরীক্ষাও করাতে পারিনি। এক কথায় এখানে ল্যাবই নাই। সরকার যদি সুদৃষ্টি দেয় তাহলে হাসপাতালটি আবারও জেগে উঠবে। আমতলী এলাকার রাবেয়া খাতুন বলেন, এই হাসপাতালে আগে যে সেবা পাওয়া যেত তা এখন কিছুই পাওয়া যায়না। আগে ওষুধ পাওয়া যেতো, সিজার হতো, এখন কিছুই হয়না। এখানে ওষুধ লিখে দেয়, আর বাহিরে থেকে কিনে নিয়ে আসতে হয়। এখানকার সেবা ধ্বংসের পথেই বলা চলে।
পাঁচবিবির রতনপুর গ্রামের আসমা খাতুন বলেন, আমার ভাতিজি হাসপাতালে ভর্তি আছে। এখানে ভাল কোন চিকিৎসা পাচ্ছেনা। আমরা গরীব মানুষ বাহিরে থেকে ওষুধ কিনে খেতে হচ্ছে। এছাড়া ভবনের অবস্থা খুবই খারাপ কখন যে ভেঙে পড়বে। তাই ভবনটি নতুন করে তৈরীসহ সকল সমস্যা সমাধান করা হলে হাসপাতালটি আবার আগের অবস্থানে ফিরে আসবে। বালিঘাটা গ্রামের আনিছুর রহমান এক রোগীর স্বজন বলেন, মাতৃমঙ্গল হাসপাতাল মানে জয়পুরহাটে বিখ্যাত একটি হাসপাতাল বলেই আগে সবাই চিনতো। এখন হাসপাতালের নাম থাকলেও সেবার মান একেবারেই ধ্বংস। এখানে আসলেই শুনি কিছুদিনের মধ্যে সব ঠিক হবে, কিন্তু কিছুই হয়না। গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালটিকে কেউ গুরুত্ব দেয়না। এটি ভাল করে চালু করা হোক, না হলে বন্ধ করে দেওয়া হোক।
হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স চ¤পা পারভিন বলেন, হাসপাতালে ওষুধ নাই। পরীক্ষা নিরিক্ষার কোন ব্যবস্থা নাই। এনেস্থেসিয়া ডাক্তারও নাই। এজন্য সিজারিয়ান সেকশন থেকে রোগীরা সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন। আগে এখানে রোগীরা অনেক ভিড় করলেও এখন আর রোগী তেমন আসে না। এছাড়া ভবনের অবস্থা খুব খারাপ। জনবল কম হওয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টাফদের অনেক সময় ডাবল ডিউটি করতে হয়। এতে রোগীদের পাশাপাশি চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাসপাতালের স্টাফদের।
প্রতিষ্ঠানটির মেডিকেল অফিসার ডাঃ শাহানা পারভীন বলেন, এনেস্থেসিয়া ডাক্তার না থাকায় এখানে দেড় বছর থেকে কোন অপারেশন করতে পারছিনা। জনবল সঙ্কটের কারণে রোগীদের কাঙ্খিত সেবা দিতে পারছিনা। ওষুধের সরবারহও নেই। যদি এগুলো সমাধান করা হয়, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ যদি এসব বিষয়ে দৃষ্টি দেয় তাহলে আমরা আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারবো। এক সময় এই প্রতিষ্ঠানটি অনেক গুরুত্ব বহন করতো।
জয়পুরহাট প্রতিনিধি
১৫-১১-২০২৫ দুপুর ১:৬
নানা রকমের সমস্যা নিয়ে ধুকে ধুকে চলছে জয়পুরহাটের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। দীর্ঘদিন থেকে নেই ওষুধ সরবারাহ। নেই পরীক্ষা-নিরাক্ষার বিভিন্ন যন্ত্রপাতি। সেই সাথে এনেস্থেসিয়া ডাক্তার ও প্রয়োজনীয় জনবল না থাকাতে এ প্রতিষ্ঠানটির চিকিৎসা সেবায় একেবারেই ধ্বস নেমেছে। এ ছাড়া দীর্ঘদিনের পুরোনো ভবন জরাজীর্ণ হওয়ায় ঝুঁকি নিয়েই চলছে স্বাস্থ্যসেবা। তাই দ্রুত সমস্যাগুলো সমাধান করে কাঙ্খিত সেবা নিশ্চিত করার দাবি রোগী ও স্বজনদের। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, নানা সঙ্কট থাকায় কাঙ্খিত সেবা দেওয়া যাচ্ছেনা। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ সমস্যাগুলো সমাধান করলে রোগীদের কাঙ্খিত সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
সরেজমিনে জানা গেছে, বিগত ১৯৭৯ সালে মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে জয়পুরহাট শহরের ধানমন্ডি এলাকায় প্রতিষ্ঠা করা হয় সরকারি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। এটি জয়পুরহাট মাতৃমঙ্গল হাসপাতাল নামেই বেশি পরিচিত। চিকিৎসা সেবায় হাসপাতালটি এক সময় ব্যাপক সুনাম কুড়ালেও বর্তমানে নানা সমস্যায় চিকিৎসা সেবায় একেবারেই ধ্বস নেমেছে। ফলে এখন আর সেবা নিতে আসাদের তেমন কোন কল্যাণ করতে পারছে না হাসপাতালটি। হাসপাতালটিতে গত প্রায় ৮ মাস থেকে নেই কোন ঔষধ সরবরাহ। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাাতি না থাকায় বন্ধ রয়েছে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থাও। আর প্রয়োজনীয় জনবল সঙ্কট সহ এনেস্থেসিয়া ডাক্তার না থাকায় গত প্রায় দুই বছর থেকে সব ধরনের অপারেশনও বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র নরমাল ডেলিভারী করানো হচ্ছে এখানে। এছাড়া পুরাতন ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় তৈরী হয়েছে ঝুঁকি। ভবনের অনেক জায়গায় ফাটল ধরেছে। কিছু জায়গায় খুলে পড়েছে পলেস্তোরা। এতে রোগীদের পাশাপাশি চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাসপাতালের স্টাফদের। দ্রুত সমস্যাগুলো সমাধান করার দাবি রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের।
জয়পুরহাট শহরের সাহেব পাড়ার আব্দুল মোমিন বলেন, আমার স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসেছিলাম। ৩ বার চেকআপ করালাম, কিন্তু একবারও ওষুধ পাইনি। মেশিন না থাকায় আলট্রাসনোগ্রাম করাতে পারিনি। রক্ত পরীক্ষাও করাতে পারিনি। এক কথায় এখানে ল্যাবই নাই। সরকার যদি সুদৃষ্টি দেয় তাহলে হাসপাতালটি আবারও জেগে উঠবে। আমতলী এলাকার রাবেয়া খাতুন বলেন, এই হাসপাতালে আগে যে সেবা পাওয়া যেত তা এখন কিছুই পাওয়া যায়না। আগে ওষুধ পাওয়া যেতো, সিজার হতো, এখন কিছুই হয়না। এখানে ওষুধ লিখে দেয়, আর বাহিরে থেকে কিনে নিয়ে আসতে হয়। এখানকার সেবা ধ্বংসের পথেই বলা চলে।
পাঁচবিবির রতনপুর গ্রামের আসমা খাতুন বলেন, আমার ভাতিজি হাসপাতালে ভর্তি আছে। এখানে ভাল কোন চিকিৎসা পাচ্ছেনা। আমরা গরীব মানুষ বাহিরে থেকে ওষুধ কিনে খেতে হচ্ছে। এছাড়া ভবনের অবস্থা খুবই খারাপ কখন যে ভেঙে পড়বে। তাই ভবনটি নতুন করে তৈরীসহ সকল সমস্যা সমাধান করা হলে হাসপাতালটি আবার আগের অবস্থানে ফিরে আসবে। বালিঘাটা গ্রামের আনিছুর রহমান এক রোগীর স্বজন বলেন, মাতৃমঙ্গল হাসপাতাল মানে জয়পুরহাটে বিখ্যাত একটি হাসপাতাল বলেই আগে সবাই চিনতো। এখন হাসপাতালের নাম থাকলেও সেবার মান একেবারেই ধ্বংস। এখানে আসলেই শুনি কিছুদিনের মধ্যে সব ঠিক হবে, কিন্তু কিছুই হয়না। গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালটিকে কেউ গুরুত্ব দেয়না। এটি ভাল করে চালু করা হোক, না হলে বন্ধ করে দেওয়া হোক।
হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স চ¤পা পারভিন বলেন, হাসপাতালে ওষুধ নাই। পরীক্ষা নিরিক্ষার কোন ব্যবস্থা নাই। এনেস্থেসিয়া ডাক্তারও নাই। এজন্য সিজারিয়ান সেকশন থেকে রোগীরা সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন। আগে এখানে রোগীরা অনেক ভিড় করলেও এখন আর রোগী তেমন আসে না। এছাড়া ভবনের অবস্থা খুব খারাপ। জনবল কম হওয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টাফদের অনেক সময় ডাবল ডিউটি করতে হয়। এতে রোগীদের পাশাপাশি চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাসপাতালের স্টাফদের।
প্রতিষ্ঠানটির মেডিকেল অফিসার ডাঃ শাহানা পারভীন বলেন, এনেস্থেসিয়া ডাক্তার না থাকায় এখানে দেড় বছর থেকে কোন অপারেশন করতে পারছিনা। জনবল সঙ্কটের কারণে রোগীদের কাঙ্খিত সেবা দিতে পারছিনা। ওষুধের সরবারহও নেই। যদি এগুলো সমাধান করা হয়, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ যদি এসব বিষয়ে দৃষ্টি দেয় তাহলে আমরা আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারবো। এক সময় এই প্রতিষ্ঠানটি অনেক গুরুত্ব বহন করতো।